সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করনীয় কি
সেকেন্ড হ্যান্ড বাব পুরানো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি তা জানা আমাদের জন্য জরুরী। কখনো কখনো পুরানো গাড়ি বিক্রি করার সময় ভালো দাম পাওয়া যায় না।সুতরাং আজকের এই আর্টিকেলে সেকেন্ড হ্যান্ড ও পুরনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করনীয় কি সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
সূচিপত্রঃ সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি
- ভূমিকা
- সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি
- সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি কেনার আগে কি জানা জরুরি
- গাড়ির যত্নে যে ১৩টি কাজ নিয়মিত করা উচিত
- বাইকের টায়ার প্রেশার চেক করার সঠিক উপায় কী
- বাইকের টায়ারে হাওয়ার প্রেসার কত রাখা উচিত
- বাইকের টায়ার প্রেশার বেশি বেড়ে গেলে করণীয় কি
- বাইকের টায়ারের গুরুত্ব
- উপসংহার
ভূমিকা
বিভিন্ন কারণে আপনার শখের পুরানো গাড়িটি বিক্রি করে দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে একজন মালিকানাধীন গাড়ি বিক্রি করার সময় বিভিন্ন রকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় পুরানো গাড়িটির সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় দেখা যায় পছন্দ মতো দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অনেকের মন খারাপ হয়ে যায়। তবে কিছু পরামর্শ মেনে চললেও সাবধানতা অবলম্বন করলে সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি ভালো দামে বিক্রি করা সম্ভব।
সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি
গাড়ির দাম নির্ধারণ করা: একটি গাড়ির কিভাবে সবচেয়ে ভালো দাম পাওয়া যাবে এটা বুঝতে পারবেন কিছু পরামর্শ মেনে চললে। মনে করুন, নতুন গাড়ি কেনার পর চার বছর চালিয়ে এখন বিক্রি করতে চাইছেন। প্রথম অবস্থায় আপনার মাথায় আসবে যে গাড়িটির দাম বা বিক্রয় মূল্য কত হবে। এটি অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে।
আরো পড়ুনঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি - এটি কোথায় কিভাবে ব্যবহৃত হয়
গাড়িটির বর্তমান অবস্থা ইঞ্জিন কাজ কত কিলোমিটার চলেছে বর্তমান অবস্থা কিংবা একই মডেলের বর্তমান এসব নির্ভর করে গাড়িটির দাম নির্ধারিত হয়। তাছাড়াও আপনার গাড়ির বৈশিষ্ট্য সাথে মিলে যাচ্ছে এমন গাড়ির সম্ভাব্য দাম জেনে আপনার গাড়ির দাম অনুমান করা যেতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা মার্কেটপ্লেস থেকেও আপনার গাড়ির দাম জেনে নেওয়া যেতে পারে।
একাধিক ক্রেতাকে দেখান: সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য দুই বা ততোধিক ক্রেতাকে দেখান। বিভিন্নজনকে দেখালে ভিন্ন ভিন্ন দাম পাওয়া যেতে পারে এর ফলে আপনি আপনার গাড়ির বিক্রয় মূল্য সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন। যেই ব্যক্তিকেই গাড়ি দেখান না কেন তাদের অন্যান্য মতামত অফারের দাম লিস্ট করে রাখুন। এতে করে সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি তা বুঝতে পারবেন।
বিক্রির সময় নির্ধারণে সতর্ক থাকুন: আপনার গাড়ির উপযুক্ত বিকির সময় কোনটি তা নির্ধারণ করতে হবে অনেক ভেবেচিন্তে, সব জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে। যদি খেয়াল করে থাকেন যে আপনার গাড়িটি আপনাদের আশেপাশে এখন অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে, তবে যত দ্রুত সম্ভব গাড়িটি বিক্রি করে ফেলুন। এরপর, গাড়ির কখন দাম বাড়ছে, কখন কমছে সেই বিষয়ে মাথায় রেখে গাড়ি বিক্রি করবেন। তাহলে আশা করছি গাড়ির উপযুক্ত দাম পাবেন। এতে করে সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি তা বুঝতে পারবেন।
সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি কেনার আগে কি জানা জরুরি
বাজেট নির্ধারণ: সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি কেনার আগে সর্বপ্রথম আপনাকে বাজেট নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কত থেকে কত বাজেটের গাড়ি কিনতে চান সেটা জানা থাকলেগাড়ি নির্বাচন করা আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে। বাজেটের বাইরে গাড়ি দেখে অযথা সময় নষ্ট না করে আপনার নিজের বাজেট অনুযায়ী গাড়ি নির্বাচন করতে হবে।
প্যাসেঞ্জার বা ধারণক্ষমতা: আপনার প্রয়োজন বা আপনার পরিবারের সদস্য অনুযায়ী গাড়ি নির্বাচন করতে হবে। এরপর গাড়ির ধারণ ক্ষমতা বা সিটগুলো ভালোভাবে যাচাই করে নিন। কোনরকম সমস্যা আছে কিনা তা কেনার আগেই চেক করে নিন।
ফুয়েল ইকোনমি: সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরনো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে জ্বালানি খরচটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফুয়েল ইকোনমি নির্দেশ করে জ্বালানির ওপর কেমন ব্যয় হবে এবং ফুল ট্যাংকিতে গাড়ি কতদূর যাবে।
পারফরমেন্স: আমরা জানি যে, একটি ভি৬ ইঞ্জিন বনাম ভি৮ ইঞ্জিনের সাথে কম্পেয়ার বা তুলনা করলে অবশ্যই ভি৮ ইঞ্জিনে ভালো পারফরমেন্স রয়েছে। আপনার কি পরিমান গতির গাড়ি প্রয়োজন তার উপর ভিত্তি করে পছন্দ মতো গাড়ি নির্বাচন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত গতি মানে হচ্ছে অতিরিক্ত জ্বালানি।
কাগজপত্র: বর্তমানে পুরনো গাড়ি বিক্রয় এর খাতটি চুরি করা গাড়ি দিয়ে ছড়িয়ে আছে। আপনি অবশ্যই কোন চুরি করা গাড়ি কিনতে চাইবেন না। এজন্য গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন, ইন্সুরেন্স ও অন্যান্য যাবতীয় কাগজপত্র অবশ্যই চেক করে নিতে হবে তবে আপনি সুরক্ষিত থাকবেন।
টেস্ট ড্রাইভ এবং স্বশরীরে পরিদর্শন: অনলাইনে বর্তমানে গাড়ি কেনাবেচার প্রাদুর্ভাব রয়েছে। তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়মনে রাখতে হবে গাড়ি কেনার সময় সশরীরে পরিদর্শন করে গাড়ির কোন ভুল ত্রুটি ও ক্ষতবিক্ষত আছে কিনা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরী।
গাড়ির যত্নে যে ১৩টি কাজ নিয়মিত করা উচিত
- গাড়ি প্রতিদিন চালানোর চেষ্টা করুন: সতর্কতা অবলম্বনে প্রতিদিন গাড়ি চালানোর সময় না হলেও চেষ্টা করবেন গাড়ির ইঞ্জিন প্রতিদিন অল্প কিছুক্ষণের জন্য চালু করে রাখা। এতে করে কোন সমস্যা ছাড়াই গাড়ি দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করতে পারবেন।
- মানসম্মত পাম্প থেকে জ্বালানী নেওয়ার চেষ্টা করুন: কোন পাম্প থেকে জ্বালানি নেওয়ার পূর্বে নিয়মিত ভালোভাবে ফিল্টার পরিবর্তন করে কিনা তার জানা জরুরি। যদি নিয়মিত ফিল্টার পরিবর্তন না করা পাম থেকে তেল নেন তবে আপনার গাড়ির জন্য ক্ষতি হবে।
- চাকা আটকে গেলে জোরাজুরি করবেন না: কখনো যদি গাড়ির চাকা আটকালে ভারী যন্ত্রণা সেই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে গাড়ির চাকার অবস্থা আরো খারাপ করবেন না। গাড়িকে বারবার সামনে পেছনে নিলে অনেক তাপ উৎপন্ন হয় গাড়ি ট্রান্সমিশন, ক্লাচ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রের ক্ষতি হয়।
- গাড়ি ছায়ায় পার্ক করুন: গাড়ি দীর্ঘ সময়ে সূর্যালোকে থাকলে গাড়ির ভেতর বাইরের দিকের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য যথাসম্ভব আপনার গাড়িটি ছাড়াই পার্ক করার চেষ্টা করুন।
- উইন্ডশিল্ডের ছোট ফাটল দ্রুত মেরামত করুন: গাড়ির উইন্ডশিল্ডের কাজ যদি কোন কারণে ক্র্যাক দেখা যায় তাহলে দেরি না করে তার দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা করুন।
- গাড়ির ছাদে ভারী কিছু নেবেন না: গাড়ির ছাদে ভারে কিছু নেওয়ার আগে সে গাড়ির ধার্য ক্ষমতা বা ওয়েট লিমিট যাচাই করে নিন। প্রকৃতপক্ষে এটি ৭০-৯০ কেজির মধ্যে হয়।
- গাড়ির রঙ ভালো রাখতে নিয়মিত পরিষ্কার করুন: গাড়ির রং ভালো রাখতে গাড়ি ওয়াশ বা নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। গাড়ি ওয়াশ করলে এর অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্থ করে গাড়ির স্থায়িত্ব বাড়াতে সহায়তা করে।
- ইঞ্জিন পরিষ্কার রাখুন: পরিষ্কার ইঞ্জিন অপরিষ্কার ইঞ্জিনের তুলনায় কম উত্তপ্ত হয়ে থাকে এজন্য প্রতি এক বা দুই বছর অন্তর অন্তর ইঞ্জিন পরিষ্কার করাটা জরুরী।
- গাড়ির এসি নিয়মিত ব্যবহার করুন: গাড়ির এসি সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত ব্যবহার করুন। গাড়ি এসি যাতে দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- গাড়ির ব্যাটারি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন: গাড়ির ব্যাটারির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এর পর্যবেক্ষণ নিয়মিত করুন। তাছাড়াও ব্যাটারির নোংরা কেস বিদ্যুৎ পরিবহনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য গাড়ির ব্যাটারি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।
- গিয়ার অয়েল পরিবর্তন করা: গাড়ির গিয়ার শিফটিংয়ে যদি ত্রুটি দেখা যায় অথবা গাড়িতে গিয়ার দেয়ার পরে যদি ইঞ্জিন দেরিতে কাজ করে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গিয়ার অয়েল পরিবর্তন করুন।
- গাড়ির লুকিং গ্লাস ও হেড লাইট পর্যবেক্ষণ: গাড়ি চালানোর সময় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গাড়ির লুকিং গ্লাস ও হেডলাইট পর্যবেক্ষণ করা। বিশেষ করে হাইওয়েতে পেছনের দিকে কোন গাড়ি আসছে কিনা তার অবস্থা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে এবং এক্সিডেন্ট এর হাত থেকে রক্ষা করবে।
- ফুয়েল মনিটরিং: পাম্প থেকে অনেক দূরে ফুয়েল শেষ হয়ে গেলে আমাদেরকে অনেক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। এজন্য সকালে বের হওয়ার আগে গাড়ির ফুয়েল অবশ্যই নিয়মিতচেক করুন।
বাইকের টায়ার প্রেশার চেক করার সঠিক উপায় কী
ম্যানুফ্যাকচার দ্বারা নির্ধারিত টায়ার পেশার বজায় রাখার জন্য বাইকের
কন্ট্রোলিং পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সঠিক রাইডিং নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই সঠিক
পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে। গাড়ির টায়ার প্রেসার অতিরিক্ত বেশি বা কম থাকলে এর
কাজে ক্ষমতা কমে যায়। বাইকের টায়ারে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকলে তাকে ভালো গ্রিপ
পাওয়া যায়। পেশার স্বাভাবিক হলে বাইকে পারফরম্যান্স ভালো পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর সেভ না করে মেসেজ পাঠানোর নিয়ম
বাইকের সামনে এবং পেছনে কত পিএসআই রাখতে হবে তা পেছনের চাকার মধ্যে উল্লেখ করা
রয়েছে। যদি সামনের চাকার পিএসআই ২৯ এবং পেছনের ৩৩ শাখা চাই সবচেয়ে বেশি ভালো
হবে। যদি অতিরিক্ত আরোহী থাকেন তবে সামনে ৩৫ এবং পেছনে ৪০পিস রাখা উত্তম।
বাইকের টায়ারে হাওয়ার প্রেসার কত রাখা উচিত
সব সময় চেষ্টা করবেন টায়ার প্রেসার নির্ধারিত রাখার। সামনে এবং পেছনে কত
পিএসআই প্রেসার রাখতে হয় তা বাইকের পেছনের চাকার আশেপাশেই লিখা রয়েছে। সাধারণত
সামনে ২৯ এবং পেছনে ৩৩ পিএসআই রাখায় সর্বোত্তম। তবে যারা বেশি আরোহী নিয়ে
অর্থাৎ দুইজন বা তিনজন নিয়ে গাড়ি চালাই তারা সামনে সর্বোচ্চ ৩৫ এবং পেছনে ৪০ পি
এস আই রাখতে পারেন।
বাইকের টায়ার প্রেশার বেশি বেড়ে গেলে করণীয় কি
বাইকের টায়ার প্রেসার স্বাভাবিকের চেয়েবেশি বেড়ে গেলে, সেক্ষেত্রে টাইপ থেকে
প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত বাতাস বের করে ফেলাই উত্তম। টায়ারে অতিরিক্ত প্রেসার
রাখা উচিত নয়। অল্প অল্প করে টায়ার থেকে বাতাস ছেড়ে দিলে টায়ারের মধ্যে যে
অতিরিক্ত চাপ থাকে তা কমে আসে। হ্যালো ব্র্যান্ডের প্রেসার গেজ দিয়ে ট্রায়ার
প্রেসার স্বাভাবিক আছে কিনা তা চেক করে নিতে হবে। কেননা টায়ার পাশের ঠিক থাকলে
দীর্ঘ পথ চলা সম্ভব হয়।
বাইকের টায়ারের গুরুত্ব
উপসংহার
আশা করছি,এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এই বিষয়ে অল্প কিছু হলেও এই জানতে সক্ষম হয়েছেন। সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরোনো গাড়ি ভালো দামে বিক্রির জন্য করণীয় কি নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url