বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো ২০২৪
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আপনাকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আজকের আর্টিকেলে বাংলাদেশের
কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো এই বিষয়ে তুলে ধরা হবে। আপনি যদি
বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো? এ বিষয়ে জানতে চান তবে সম্পূর্ণ
পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আশা করি, বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং
সবচেয়ে ভালো ২০২৪ এটি জেনে আপনি উপকৃত হবেন।
আমাদের সাথে পুরো পোস্ট জুড়ে থাকলে, বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে
ভালো ২০২৪ এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না
বাড়িয়ে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃমোবাইল ব্যাংকিং কি
বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো এ বিষয়ে আলোচনা করার পূর্বে
মোবাইল ব্যাংকিং কি এই সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া উচিত। মোবাইল ব্যাংকিং
হচ্ছে স্মার্টফোন এবং সেল ফোনের মাধ্যমে দেশের এক স্থান হতে অন্য স্থানে
অর্থ নিরাপদ ভাবে আদান-প্রদান করার ডিজিটাল কার্যক্রমকে মোবাইল ব্যাংকিং বলে।
এছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিংকে এসএমএস ব্যাংকিং এবং এম ব্যাংকিংও বলা হয়ে থাকে।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা নিজের মোবাইল ফোনের সাহায্যে
নিজের একাউন্টে এক্সেস পায়। গ্রাহকরা ব্যাংকে গিয়ে অনেক বড় লাইনে
দাঁড়ানোর পরিবর্তে ইন্টারনেটের সাহায্যে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে যে কোন
স্থান থেকে অর্থ আদান-প্রদান করতে পারে। যার ফলে, আমাদের অনেক সময় বাঁচায়।
মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা কি
মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা হচ্ছে আপনি যেকোনো সময় ঘরে বসে থেকে অথবা দেশে
যেকোন স্থান থেকে ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা আর্থিক পরিষেবাগুলো এক্সেস করতে পারবেন।
যেকোনো সময় অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন। একটি অ্যাকাউন্ট হতে অন্য
একটি একাউন্টে খুব সহজেই স্বল্প সময়ে অর্থ লেনদেন করতে পারবেন।
বর্তমানে প্রায় সকল ব্যাংকই এখন গ্রাহকদের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করার
বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছেন। এছাড়াও আপনার একাউন্টের জমা-উত্তোলন ইত্যাদি
সম্পর্কে জানতে পারবেন। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ের হার, সুদের হার, চেকের
পেমেন্ট বাতিল ইত্যাদি সম্পর্কেও জানতে পারবেন। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে
ঘরে বসে ব্যাংকিং সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন যেমন- ব্যক্তিগত ঋণ, ফিক্সড
ডিপোজিট, হোম লোন ইত্যাদিসমূহ।
বাংলাদেশে কত সালে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়
বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বপ্রথম ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং এর কার্যক্রম শুরু করে।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১১ সালের ৩১ শে মার্চ মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস
অর্থাৎ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সার্ভিস রকেট চালু হয়। রকেটের পরে ব্র্যাক ব্যাংক
তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ কে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু করে।
বর্তমান বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার দিক থেকে বাজারের বেশিরভাগ
অংশীদারিত্বের অধিকারী হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো
বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং শপ সবচেয়ে ভালো সেটি নির্ভর করে গ্রাহকের
সংখ্যা এবং সার্ভিসে মানের উপর। বর্তমান বাংলাদেশ প্রথম জনপ্রিয়তা ও সার্ভিসের
ভালো মান হিসেবে সবচেয়ে ভালো মোবাইল ব্যাংকিং হচ্ছে বিকাশ (Bkash)। ব্র্যাক
ব্যাংকের এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বিস্তৃত
রয়েছে।
বাংলাদেশে বিকাশের সবচেয়ে বেশি এজেন্ট থাকার ফলে এর গ্রাহক সংখ্যা অন্যান্য
সকল মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস এর তুলনায় অনেক বেশি। বিকাশের জনপ্রিয়তা
দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের এমন কোন অঞ্চল নেই যেখানে আপনি বিকাশ খুঁজে
পাবেন না।
বিকাশের পরে দ্বিতীয় জনপ্রিয়তার অবস্থান হচ্ছে নগদের। মোবাইল ব্যাংকিং এ
নগদ নতুন হওয়া সত্বেও বিকাশের পরের স্থান দখল করে নিয়েছে। এজন্য বর্তমান
বাংলাদেশে যা ডাক বিভাগের উদ্ভাবিত নগদ দ্বিতীয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে
পরিচিত।
এছাড়াও বিকাশের চেয়ে নগদের খরচ তুলনামূলক কম হওয়ার কারণে অনেকে বিকাশ
ব্যবহার করা বন্ধ করে নগদ সেবাকে বেছে নিয়েছে। তবে বিকাশের গ্রাহক সংখ্যা যতই
কমে যাক না কেন এখন পর্যন্ত বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে এক নম্বর পজিশনে
রয়েছে। কেননা, এর জনপ্রিয়তা নগদের চেয়ে অনেক বেশি।
বাংলাদেশের সকল জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং এর তালিকাসমূহ
বাংলাদেশের সকল জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং এর তালিকাসমূহ নিম্নে
বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলি মনোযোগ
সহকারে পড়েন তবে বাংলাদেশের সকল জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে সক্ষম হবেন।
বিকাশ (Bkash): বর্তমানে বাংলাদেশে সকল মোবাইল ব্যাংকিং এর
চেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং হচ্ছে বিকাশ। বিকাশের জনপ্রিয়তা দিন দিন
বেড়েই চলেছে কেননা, দেশের এমন কোন অঞ্চল নেই যেখানে বিকাশের পরিচিত। প্রথম
আলোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ৬ কোটি ৭৫ লাখ গ্রাহক সংখ্যা হচ্ছে বিকাশের।
নগদ (Nagad): বাংলাদেশের দ্বিতীয় জনপ্রিয় ও বৃহত্তম মোবাইল
ব্যাংকিং হচ্ছে নগদ। নগদ মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি চালু হয় ২০১৯ সালে। নগদে
বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা হচ্ছে ৮ কোটির অধিক এটি রাইসিং বিডির প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে।তবে, ধারণা করা হচ্ছে নগদ অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আরো বেশি জনপ্রিয়
হয়ে উঠবে।
রকেট (Rocket): ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হচ্ছে
রকেট। রকেট বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা হিসেবে পরিচিত।
প্রথম এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বর্তমানে রকেটের মোট গ্রাহক সংখ্যা হচ্ছে ১
কোটি ৮২ লাখের বেশি।
উপায় (Upay): উপায় মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমটি হচ্ছে ইউনাইটেড
কমার্শিয়াল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেল যা ২০২১ সালে এই সার্ভিসটি চালু
হয়। এটি বর্তমান বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপায় নতুন গ্রাহকদের
জন্য বেশ কিছু রেফারেন্স বোনাস ও বিভিন্ন অফার এর সুবিধা দিচ্ছে।
মাই ক্যাশ (My Cash): মাই ক্যাশ হচ্ছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মোবাইল
ব্যাংকিং সিস্টেম। মাই ক্যাশ বর্তমানে জনপ্রিয়তা না পেলেও এই সিস্টেম
গ্রাহকদের কে বিভিন্ন ভাবে আকৃষ্ট করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
শিওর ক্যাশ(Sure Cash): রূপালী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম হচ্ছে
সিওর ক্যাশ। বাংলাদেশের অনেকেই রূপালী ব্যাংক এর সেবা গ্রহণ করে
থাকে। যার ফলে, শিওর ক্যাশ পর্যায়ক্রমে গ্রাহক গ্রাহকদেরকে আকৃষ্ট করতে
সক্ষম হচ্ছে।
এম ক্যাশ (M Cash): এম ক্যাশ হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক এর মোবাইল ব্যাংকিং
সিস্টেম। আপনি বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চল থেকে অর্থ আদান-প্রদান খুব সহজেই করতে
পারবেন। কেননা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংক হওয়ায় এম ক্যাশে
মাধ্যমে লেনদেন করা অতি সহজ।
টি ক্যাশ (T Cash): টি ক্যাশ হচ্ছে ট্রাস্ট ব্যাংকের মোবাইল
ব্যাংকিং সিস্টেম। যে সকল গ্রাহকরা ট্রাস্ট ব্যাংকের লেনদেন করে সে সকল
গ্রাহকরা টি ক্যাশ ব্যবহার করে। তবে এর জনপ্রিয়তা খুব একটা বেশি নয়।
মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কি কি সেবা পাওয়া যায়
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কি কি সেবা পাওয়া যায় তা নিম্নে তুলে ধরা হলো
-
- টাকা জমা করা যায়।
- এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করা যায়।
- কেনাকাটা করে পেমেন্ট করা যায়।
- পানির বিল, বিদ্যুৎ বিল এবং গ্যাস বিল প্রদান করা যায়।
- মোবাইল রিচার্জ করা যায়।
- স্কুল কলেজর ফি প্রদান করা যায়।
- বেতন ভাতা গ্রহণ ও প্রদান করা যায়।
- বাণিজ্যিক পরিশোধ করা যায়।
- সরকারি-বেসরকারি ভাতা বিতরণ করা যায়।
লেখকের শেষ কথা
বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং এর সাহায্যে অর্থ লেনদেন করা খুবই সহজতর
হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং চালু হওয়ার পূর্বে অর্থ লেনদেনের একমাত্র মাধ্যম ছিল
ব্যাংক। তবে ব্যাংকে গিয়ে লেনদেন করাটা বেশ সময় সাপেক্ষ। এজন্য বর্তমানে মোবাইল
ব্যাংকিং চালু হওয়ার ফলে খুব সহজেই ঘরে বসে অথবা দেশে যে কোন প্রান্ত থেকে অর্থ
আদান-প্রদান করতে পারি।
আশা করছি, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অল্প কিছু হলেও বাংলাদেশের কোন মোবাইল
ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো ২০২৪ এই সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়েছেন। যদি এ বিষয়ে
আপনাদের মাঝে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে
জানাতে পারেন।
বাংলাদেশের কোন মোবাইল ব্যাংকিং সবচেয়ে ভালো ২০২৪ নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি
আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও আপনার পরিচিতদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য
ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url