কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪ - কলা খেলে কি ওজন বেড়ে যায়
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, সকলকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। দৈনন্দিন জীবনে
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখলে আমাদের মানব দেহের অনেক উপকারে
আসবে। আজকের আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন -
গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আপনি আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকলে, কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪ - কলা
খেলে কি ওজন বেড়ে যায় এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন,
আর কথা না বাড়িয়ে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
কলা আমাদের দেশে বেশ পরিচিত। এটি সবচেয়ে স্বাভাবিক এবং বৈচিত্র্যময় একটি ফল।
এমন কোন ব্যক্তি নেই সে বলা যায় না বা চেনেনা এই বিষয়ে আলোচনা করাটা আমার মনে
হয় এক ধরনের বোকামি। এর চেয়ে ভালো হবে কলার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ, কলা খাওয়ার
উপকারিতা ও অপকারিতা ও আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করাটা।
যেন আপনারা করা সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্যগুলি জানতে পারেন। আমরা সকলেই বেঁচে
থাকার তাগিদে খাবার খেয়ে থাকি। এজন্য আমাদেরকে খাবার গ্রহণ সম্পর্কে বেশ সচেতন
থাকতে হবে। এমত অবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নেওয়াটা আমাদের
সকলের জন্য অনেক জরুরী।
কলার পরিচিতি কি
কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নেওয়ার পূর্বে চলুন কলার পরিচিতি এক পলক
দেখে নেই। কলা হচ্ছে এক ধরনের ফল যা পুরো বিশ্ব জুড়ে যায় এর জনপ্রিয়তা
বহুলভাবে প্রচলিত। এই কলার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি।
মূলত উষ্ণবায়ুতে কলার ফলন অনেক ভালো। আমাদের বাংলাদেশ মুন্সিগঞ্জ জয়পুরহাট
চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর যশোর সহ আরো অন্যান্য অঞ্চলে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে
চাষ হয়ে আসছে।
পার্বত্য এলাকাগুলোতে কলার বেশ কিছু বুনোজাত দেখা মেলে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে
মামা কলা, বাংলা কলা, বনকলা ইত্যাদি। তবে কলা গাছের বেশ কিছু জাত রয়েছে কিন্তু
বৈশিষ্ট্য অনুসারে কলা গাছকে দুই ভাগে বিভক্ত প্রথমটি হচ্ছে খাটো জাতের গাছ
দ্বিতীয়টি হচ্ছে লম্বা জাতের গাছ। ল্যাটিন আমেরিকা দেশগুলোতে অর্থকারী ফসল হচ্ছে
কলা।
একটি কলাতে কি পরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে
একটি কলাতে কি পরিমাণ পুষ্টিগুণ থাকে এ বিষয়ে আমাদের অনেকের অজানা। তাহলে চলুন
একটি মাঝারি মাপের কলাতে কি পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে -
- শর্করা (৭.২ মিলিগ্রাম)
- আশ (০.৪ মিলিগ্রাম)
- আমিষ (১. ২ মিলিগ্রাম)
- ফ্যাট (০.৩ মিলিগ্রাম)
- আয়রন (০.৬ মিলিগ্রাম)
- খনিজ লবণ (০.৮ মিলিগ্রাম)
- ভিটামিন সি (৯.০ মিলিগ্রাম)
- ভিটামিন এ (২৫.০ আই ইউ)
- ভিটামিন বি (৬০.৫ মিলিগ্রাম)
- ফসফরাস (৫০ মিলিগ্রাম)
কলা খাওয়ার উপকারিতা কি
কলা খেতে অনেক সুস্বাদু। আমাদের অনেকের প্রিয় ফল কলা। কলাতে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি রয়েছে। এবার আমরা জেনে নেব কলা খাওয়ার উপকারিতা।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: একটি কলাতে অনেক ফাইবার রয়েছে যা আমাদের
পেট পরিষ্কার ও হজম শক্তি বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে বেশ উপকারী। কলা খেলে অনেক দ্রুত
হজম করতে সহায়তা করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: কলা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ সহায়ক হিসেবে কাজ
করে। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-এক্সিডেন্ট। অনেকের মধ্যে একটি
ভুল ধারণা রয়েছে যে কলা খেলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি হয় এই সম্পূর্ণ
ধারণাটি আসলে ভুল ধারণা। এজন্য আপনি নির্দ্বিধায় ওজন বৃদ্ধি পাবে না ভেবে
পরিমাণ মতো কলা খেতে পারেন।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: কলা খেলে আমাদের মধ্যে যাদের উচ্চ
রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের রক্তচাপ জনিত সমস্যা দূর করে থাকে। কেননা কলাতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। সুগারের পরিমাণ অনেক কম। এজন্য উচ্চ
রক্তচাপ সহায়ক হিসেবে প্রতিদিন কলা খেতে পারেন।
মনোযোগ শক্তি বৃদ্ধি করে: কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম আমাদের মনোযোগ
শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এজন্য, আপনি যদি মনোযোগ শক্তি বৃদ্ধি করতে চান
তবে নিয়মিত কলা খেতে পারেন।
দেহের এনার্জি বৃদ্ধি করে: কলা খাওয়ার সকল উপকারিতা মধ্যে সবচেয়ে
উত্তম উপকারিতা হচ্ছে মানুষের শরীরের এনেছি বৃদ্ধি করতে কলা অনেক ভূমিকা পালন করে
থাকে। আপনি যদি অস্বাভাবিক দুর্বলতা অনুভব করেন, তাহলে কলা খাবেন তাহলে আপনার
শরীরের শক্তি ফিরে আসবে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে শরীরের ভেতরে
পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গেলে হৃদস্পন্দনের হার অনেকটাই বেড়ে যায়। যেটি
স্ট্রোকের দিকে অগ্রসর করে। কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। আপনি
যদি নিয়মিত একটি করে কলা খান তাহলে আপনার স্ট্রোকে ঝুঁকি কমে যাবে।
কলা খাওয়ার অপকারিতা কি
প্রতিটা খাদ্যে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অতিমাত্রায় খেলে এর অপকারিতাও
রয়েছে। তাহলে চলুন কলা খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নেই -
- কলাতে বিদ্যমান শর্করা থাকার ফলে আপনি যদি অতিমাত্রায় কলা খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
-
যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তারা অতিমাত্রায় কলা খেলে এলার্জির ফলে
গলা জ্বালা করে এবং ঠোঁট ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
-
গলার মধ্যে এক ধরনের ডায়রামাইল উপাদান রয়েছে যেটি মাইগ্রেনের অন্যতম
কারণ। এজন্য যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকায়
উত্তম।
- সকালে খালি পেটে অতিমাত্রায় কলা খেলে পেটে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এছাড়াও খালি পেটে কলা খেলে এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য অবশ্যই এই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। এছাড়াও, বর্তমান বাজারে বেশিরভাগ গলাতে বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে কলা পাকানো হয় যার ফলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে হয়।
কলা খেলে কি ওজন বেড়ে যায়
করা খেলে কি ওজন বেড়ে যায় নাকি ওজন কমে এই বিষয়ে অনেকেরই কনফিউশন রয়েছে। কিছু
মানুষ মনে করেন কলাতে থাকা ক্যালোরি বা শর্করা আমাদের শরীরে ওজন বৃদ্ধি করে।
কেননা সাধারণত ক্যালরি বা শর্করা আমাদের শরীরে ওজন বাড়ায়। কিন্তু কলাতে
ক্যালরি বা শর্করা তারাও এতে আরো অনেক উপাদান হয়েছে।
তার মধ্যে ফাইবার অন্যতম। কলাতে ফাইবার থাকার কারণে কলা খেলে সহজে খাদ্য হজম করে।
এছাড়াও ফাইবার থাকার ফলে আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। যা অন্যান্য খাবার খেতে
মনোবল জাগে না। এজন্য আমাদেরকে হেরে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়।
লেখকের শেষ কথা
আমরা ইতিমধ্যে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কলা খেলে কি ওজন বেড়ে যায়
এই সম্পর্কে জানা হয়ে গিয়েছে। পরিশেষে বলতে চাই, কলা খাওয়ার অপকারিতার চেয়ে
উপকারিতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি। এজন্য যাদের কোনরকম সমস্যা
নেই তারা নিশ্চিন্তে প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারবেন। তবে হ্যাঁ সকালে খালি
পেটে কলা খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
আশা করছি, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এই বিষয়ে অল্প কিছু হলেও কলা খাওয়ার
উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪ - কলা খেলে কি ওজন বেড়ে যায় এই সম্পর্কে জানতে
সক্ষম হয়েছেন। যদি এ বিষয়ে আপনাদের মাঝে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে
অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২৪ - কলা খেলে কি ওজন বেড়ে যায়
এই সম্পর্ক নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও
আপনার পরিচিতদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত
অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url