গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন - গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, সকলকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখলে আমাদের মানব দেহের অনেক উপকারে আসবে। আজকের
আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন - গর্ভাবস্থায় কখন
পেয়ারা খাওয়া উচিত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি, গর্ভাবস্থায়
পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন - গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত জেনে আপনি
উপকৃত হবেন।
আপনি আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকলে, গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন
- গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত, গর্ভাবস্থায় পেয়ারার
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং পেয়ারার অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে
পারবেন। তাহলে চলুন, আর কথা না বাড়িয়ে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
গর্ভকালীন সময়ে নারীদের নিজের শরীরের পাশাপাশি অনবরত সন্তানের স্বাস্থ্যের
যত্নের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রায়ই মুখরোধী খাবার
খেতে মন চায়। কিন্তু সে সময়ে তারা কি কি খাবেন আর কি কি খাবেন না, সেই
বিষয়েও সচেতন হতে হয়। এমতাবস্থায়, চিকিৎসকরা খাদ্য তালিকায় ফল রাখার
পরামর্শ দিয়ে থাকে। কিছু কিছু ফল আছে যেগুলো গর্ভকালীন সময়ে উপকার না
করে ক্ষতি করতে পারে।
তবে পেয়ারা হচ্ছে এমন একটি ফল যা গর্ভকালীন সময়ে স্বাস্থ্য উপযোগী আর
অনেকেই একটি খেতে ভালোবাসে। আপনি যদি ফল খাওয়াই মুখাপেক্ষী হন তাহলে পেয়ারা
হচ্ছে গর্ভকালীন সময়ে আপনার জন্য অনেক স্বাস্থ্য উপযোগী একটি খাদ্য। এজন্য
আজকে আমরা গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়া নিরাপদ কিনা, পেয়ারা খেলে যেসব উপকার
পাবেন, গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত এবং পেয়ারার আরো অন্যান্য
সম্পর্কে আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়া কি নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়া নিরাপদ কিনা অনেকেই জানতে চাই। গর্ভকালীন
সময়ে মায়েদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখাতে দেয়। যার ফলে গর্ভবতী মা এবং
সন্তানের জন্য ক্ষতি হতে পারে। এজন্য চিকিৎসকরা গর্ভবতী মায়েদের পেয়ারা
খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র পেয়ারা গর্ভকালীন সময়ে নিরাপদ
নয়, এ অবস্থায় শরীরের নানা ধরনের যে সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দেখা
দেয় সে সকল পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পেয়ারা সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় সুষম পরিমাণে স্বাস্থ্যের জন্য পেয়ারা উপকারী হিসেবে
প্রমাণিত। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া যাবেনা। চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো পেয়ারা খেতে হবে। যেমন ধরুন গর্ভকালীন দিনে
১০০ গ্রাম থেকে ১৩০ গ্রামের বেশি গ্রহণ করা উচিত হবে না। আশা করি,
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়া নিরাপদ কিনা এবং কি পরিমাণ পেয়ারা খাওয়া
উচিত সেটা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন
গর্ভকালীন সময়ে পেয়ারা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে আমরা কয়েকটি
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সেগুলো হচ্ছে -
ভ্রূণের বিকাশে সাহায্য করে: বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায়
পেয়ারা খেলে ভ্রূণের বিকাশ ঘটে। কেননা এতে ফলিক এসিড রয়েছে ফলিক
এসিড বা ফল্ট হচ্ছে এক ধরনের ভিটামিন বি যার ফলে মায়ের সাথে
ভ্রূণের বিকাশে এটি সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন সি থাকার ফলে এটি মানবদেহের বিপাক প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে। এটি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে। এছাড়াও পেয়ারা গর্ভবতী
মহিলাদের বিভিন্ন রোগ এবং সংক্রমণ হতে রেহাই পেতে শক্তি দেয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে: গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীদের
উচ্চ রক্তচাপ প্রবণতা দেখা যায়। যার ফলে কর্মকালীন সময়ে অনেক জটিলতার
সম্মুখীন হতে পারে। এজন্য চিকিৎসক বলেন কোন গর্ভবতী মহিলা যদি প্রতিদিন
একটি করে পাকা পেয়ারা খায় তবে উচ্চ রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে
আসবে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য পেয়ারা একটি অন্যতম
মুখ্য উপকারিতা।
হজম শক্তি বাড়ায়: পেয়ারাতে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার যা সাধারণত
অন্ত্রিয় প্রতিবাহে আরাম দেয় এবং হজম হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। একই সাথে
অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে এটি পেটের বিভিন্ন ব্যাধিতে সহায়ক
হিসেবে প্রমাণিত।
দৃষ্টিশক্তি উন্নতি করে: পেয়ারাতে রয়েছে ভিটামিন
এ সমৃদ্ধ যা মা ও শিশুর দৃষ্টিশক্তির উন্নতি করে। এছাড়াও ভিটামিন এ
সমৃদ্ধ ফল শিশুর অন্ধত্ব প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। পেয়ারা খাওয়ার
উপকারিতায় এটি অন্যতম।
ক্যান্সার ঝুঁকি কমায়: পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা গর্ভবতী মহিলাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রেহাই
দেয়। গর্ভবতী নারীদের মধ্যে অনেকের স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা দেখা যায়।
এজন্য এনটিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে
সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখে: যেমনটা পূর্বেই বলা হয়েছে
পেয়ারা হচ্ছে ডায়েটারি ফাইবারের একটি অন্যতম উৎস। গর্ভকালীন সময়ে
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরের যেসব খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে সেগুলোর মাত্রা
কমাতে সহায়তা করে। একইভাবে শরীরের ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত
অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে যে গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা খাওয়া উচিত? আসলে
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। গর্ভকালীন সময়
একটি যেকোনো সময় এটি খেতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন গর্ভাবস্থায়
পরিমাণ মতো নিয়মিত পেয়ারা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগ থেকে রেহাই পাওয়া
যায়।
এজন্য, আপনি যখনই মন চাইবে এক পিচ পেয়ারায় খেয়ে নেবেন। তাহলে আপনার
এবং আপনার সন্তানের দুজনেরই উপকারে আসবে। তবে আপনাকে অবশ্যই সুষম
পরিবারের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে অর্থাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী দিনে কতটুকু পেয়ার খাবেন সেটা নির্ধারণ করা।
গর্ভাবস্থায় পেয়ারার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে চলুন
সেগুলো জেনে নেই -
- গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেয়ারা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ কাঁচা পেয়ারা শক্ত হওয়ার ফলে আপনার দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।
-
গর্ভাবস্থায় পরিমাণের চেয়ে অতিমাত্রায় পেয়ারা খেলে আপনার এবং
আপনার সন্তানের ক্ষতি হতে পারে জন্য পরিমাণ মতো পেয়ারা খেতে হবে।
-
পেয়ারাতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। ক্র্যাম্প এবং পেটে ব্যথা দেখা দিতে
পারে।
- বাজার থেকে পেয়ারা কিনে নিয়ে এসে না ধুয়ে খাওয়া যাবে না। পেয়ারা না ধুয়ে খেলে এর কীটনাশক আপনাকে ক্ষতি ক্ষতি করতে পারে। এজন্য, পেয়ারা খাওয়ার সময় সচেতন থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাদ্য তালিকায় কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাদ্য তালিকা কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন এর কিছু সহজ
উপায় হলো আপনি সালাদ হিসেবে পেয়ারা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে সকালে
খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়। ভরা পেটে পেয়ারা খেলে গর্ভকালীন
সময়ে আপনার অনেক উপকারে আসবে। এছাড়া আপনি পেয়ারার রস বা জুস বানিয়ে
খেতে পারেন।
তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলারা গর্ভকালীন সময়ে পেয়ারা তালিকাভুক্ত
করতে পারেন। কেননা এটি অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ ছাড়াও তার শরীরের সুগারের
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতেও করবে। আশা করি, গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাতা
তালিকায় কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন সেটা জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষকথা
পরিশেষে বলা যায় গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। তবে
খেয়াল রাখতে হবে যে যে কোন ফল অতিমাত্রায় খেলে আপনার এবং আপনার
সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো যে
কোন ফল খাওয়া উচিত।
সঠিক নিয়মে গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার ফলে এর উপকারিতা সহজেই
পাওয়া যায়। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এই বিষয়ে অল্প কিছু হলেও
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন - গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা
খাওয়া উচিত সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়েছেন। যদি এ বিষয়ে আপনাদের মাঝে কোন
প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে
পারেন।
গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাবেন - গর্ভাবস্থায় কখন পেয়ারা
খাওয়া উচিত নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও
আপনার পরিচিতদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত
অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url