সরকারিভাবে ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখুন প্রতিদিন বেতন সহকারে
দেশের মানুষের বেকারত্ব দূর করতে ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম একটি মাধ্যম। এজন্য,
বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ফ্রিল্যান্সিং জগতকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ফ্রী
প্রশিক্ষণ ও দৈনিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজকের পোষ্টে আমরা কিভাবে
বাংলাদেশ জাতীয় প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন এর সহায়তায় ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন
সেই বিষয়ে আলোচনা করব।
সম্মানিত পাঠক, আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে থাকেন তাহলে বাংলাদেশ জাতীয়
প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন এর সহায়তায় সরকারিভাবে কিভাবে ফ্রিতে প্রশিক্ষন এবং দৈনিক
পাচশত টাকা ভাতা সহকারে নিতে পারবেন সেই বিষয়ে জানতে পারবেন। তাই অবহেলা না করে
পুরো পোষ্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
উপস্থাপনা
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বেকারত্ব দূর করার জন্য
বেশিরভাগ তরুণেরা জীবিকা নির্বাহী তাগিদে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিচ্ছে। কারণ এখন
ভালোভাবে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিতে পারলে হ্যান্ডসাম অর্থ উপার্জন করা যায়।
তবে অনেকেরই ফ্রিল্যান্সিং শেখার মত সামর্থ্য থাকে না বা অনেকেরই ফ্রিল্যান্সিং
শেখার অনেক চাহিদা রয়েছে।
কিন্তু অর্থের অভাবে সঠিক লক্ষেে পৌঁছাতে পারছেন না। এজন্য, আমাদের
বর্তমান বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে তাদের পরিপ্রেক্ষিতে তরুণরা
যেন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে
তাই তরুণদের ফ্রিতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে
অধিকাংশ তরুণদের বেকারত্ব দূর হয়ে যাবে।
সরকার কেন ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন করাবে?
আসুন আমরা প্রথমে জেনে নেব সরকার কেন ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন করাবে
সেই সম্পর্কে ঢাকা প্রকাশের কিছু অংশ। বাংলাদেশ সরকার ফ্রিল্যান্সিং
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যেন তরুনেরা কাজ করে
অর্থ উপার্জন করতে পারে সেই লক্ষ্যে আগামী তিন বছরে ২৯ হাজারের মত
ফ্রিল্যান্সার তৈরি করবে।
এই প্রশিক্ষণে সরকারকে একটি টাকাও দেওয়া লাগবে না বরং সরকার দৈনিক ৫০০ টাকা
করে দিবেন। সরকার কি প্রকল্পের জন্য ৩ বিলিয়ন টাকা খরচ করবেন। আর এই প্রকল্পের
নাম হচ্ছে শিক্ষিত কর্ম প্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে
পুরো বাংলাদেশের ৪৮টি জেলার কর কর্মসংস্থান প্রকল্প।
এই প্রকল্পের ভ্যালিডিটি বা মেয়াদ হচ্ছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৬
সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চলমান থাকবে। সরকার সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব অর্থে
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবেন। এই প্রকল্পটি অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির
সভায় অনুমোদিত হয়েছে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি। সরকারের এই সভায় অনুমোদনের জন্য
মোট ১০টি উঠেছে।
ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন নিতে যা যা লাগবে
এবার আমরা জেনে নিব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটি হচ্ছে ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং
প্রশিক্ষণ নিতে কি লাগবে সেই সম্পর্কে। সরকারি ভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে অবশ্যই
কোন না কোন সঠিক তথ্য দেওয়াই লাগবে। শুধু এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে নয়
সরকারিভাবে যেকোনো কাজ করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া
লাগে।
প্রথমে যে বিষয়টি জেনে রাখা ভালো সেটা হচ্ছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মোট ২৫ জন করে
প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে মোটকথা ৪০টি জেলায় একক ব্যাচে সর্বমোট ৫০ জন
শিক্ষার্থী এই প্রশিক্ষণে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। এই প্রকল্পে পুরুষ ও নারী
উভয়ে আবেদন করতে পারবে।
সরকারের এই প্রশিক্ষণ নিতে হলে আপনার বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের
মধ্যে। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে জাতীয় প্রশিক্ষণ
বাস্তবায়ন সাইটে গিয়ে অ্যাপ্লিকেশন করতে হবে। অ্যাপ্লিকেশন করার পর মৌখিক ও
লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের চূড়ান্ত বলে রচিত হবে বা গণ্য করা হবে।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ নিতে হলে আপনার অবশ্যই ইন্টারমিডিয়েট (HSC)
পাশ হতে হবে। তাহলেই আপনি সরকারি ভাবে সম্পূর্ণ একেবারে ফ্রিতে এই
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার দিক হচ্ছে তিন মাসের কোর্স-এ জন প্রতি যাতা এর
ও খাবার খরচ বাবদ ৫০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হবে।
এভাবে পুরো বাংলাদেশ সর্বমোট ২৯ হাজার জনের মতো সুদক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি
করা হবে। তবে এদের মধ্যে বেশিরভাগই থাকবে নারী। এই বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের
আটটা সামাজিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন বাংলাদেশের
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে তরুণ সমাজের বেকারত্ব দূর হবে এবং তার পাশাপাশি
কর্মসংস্থানের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে সুযোগ দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণার্থীরা ভর্তি হওয়ার কার্যক্রম কেমন হবে?
প্রতিটি ব্যাচে ভর্তির জন্য জাতীয় প্রশিক্ষণ বাতায়ন ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ করা হবে। যারা আগ্রহী তারা অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপ্লকেশন করতে পারবেন।
অ্যাপ্লকেশন করার পরে প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থে বাছাইয়ের জন্য
একটি প্রশ্ন ব্যাংক থাকবে।
প্রতিটা ম্যাচের জন্য নতুন নতুন প্রশ্ন নবায়ন করা হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের
সভাপতি ও প্রকল্প পরিচালককে সদস্য সচিব করে একটি তিন সদস্যের কমিটির গঠন করা
হবে। এরপর প্রশিক্ষণার্থেদের নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য
সহকারী পরিচালকের সদস্যসচিব এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে সভাপতি
করে তিন সদস্যে কমিটির গঠন করা হবে। আশা করছি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
যেসব বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন দেওয়া হবে
এই প্রকল্পে কি কি বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো হবে সেই বিষয়ে পরিকল্পনা
কমিশনের কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা গেছে। তিনি
বলেন, প্রশিক্ষণানার্থীদের সুদক্ষ ফ্রিল্যান্সার বানানোর জন্য মোট ৮টি
বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন যে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য
হচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশগুলোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাথে অনলাইনে কাজ করে
অর্থ উপার্জন করতে পারা।
এজন্য যারা প্রশিক্ষণ করবে তাদেরকে প্রথমে ইংরেজিতে কথা বলার জন্য একটি কোর্স
করানো হবে। যাতে তারা বাইরে দেশের কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সহজেই কাজ
করতে পারে। এই প্রশিক্ষণে ফ্রিল্যান্সিং এর যেগুলো বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে
সেগুলো হচ্ছে -
- প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটিং (Professional Digital Marketing)
- প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন (Professional Graphics Design)
- অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (Account Management System)
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web Development)
- নারী কল সেন্টার এজেন্ট (Female Call Center Agent)
- নারী ই-কমার্স প্রফেশনাল (Female e-commerce Professional)
- আইটি সেবা প্রদানকারী (IT Service Provider)
লেখকের শেষকথা
উপরোক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন, স্মার্টফোনের মাধ্যমে
ফ্রিল্যান্সিং, সফট স্কিল ট্রেনিং ইত্যাদি দেওয়া হবে। আমরা
ইতিমধ্যে কিভাবে সরকারের সহায়তায় ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন প্রতিদিন
৫০০ টাকা বেতন সহকারে সেই সম্পর্কে জেনে নিয়েছি।
আশা করছি, এই বিষয়ে জেনে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি এই পোষ্টের
কোনো অংশ বুঝতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমরা
আপনাকে সঠিক তথ্য জানিয়ে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
এই আর্টিকেলটি আপনার প্রিয়জন অথবা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন যাতে তারাও
এই বিষয়ে জানতে পেরে সরকারিভাবে ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারে। যারা
এরকম নিত্যনতুন আপডেট তথ্য পেতে চান তারা আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আজকের
মত বিদায় নিচ্ছি, এতক্ষন সময় দিয়ে পোষ্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে আসসালামু
আলাইকুম।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url