ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে
মানুষের জীবনে পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেকেই জীবনযাত্রার চাপজনিত কারণে ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন।
আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনের প্রভাবের ফলে আমাদের মানসিক ও শারীরিক চাপের রোগ দিন
দিন বেড়েই চলেছে। সেই সাথে ঘুমের সমস্যাও বিলম্বনা দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ মানুষই
ঘুমের ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ সেবন যে শরীরের
কতটুকু ক্ষতি নিয়ে আসবে এই বিষয়টি হয়তো অনেকেরই অজানা।
প্রিয় পাঠক, আপনি কি ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে সেই বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন? তবে আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা টেনশন বা অন্য কারনবশত ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলি তাদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে এই বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি। আশা করছি, আপনাদের সকলেরই কমবেশি উপকারে আসবে।
পোষ্ট সুচিপত্রঃ
উপস্থাপনা
ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে এই বিষয়ে জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আমরা
কেন ঘুমের ওষুধ খায়?, ঘুমের ওষুধ বেশি খেলে কি হয়, দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ খেলে যে
সমস্যা হতে পারে, ঘুমের ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম, কারা ঘুমের ওষুধ খেতে পারবেন না,
ঘুমের ঔষধ ব্যবহারের সতর্কতা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা এ বিষয়ে গুগলের কাছে জানতে চায়। তাই আপনাদের
সুবিধার্থে আজকের পোষ্টে ঘুমের ঔষধ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য
সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সাজানো হয়েছে। তাই অবহেলা না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি শুরু
থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আমরা কেন ঘুমের
ওষুধ খায় সেটি সংক্ষেপে জেনে নেই।
আমরা কেন ঘুমের ওষুধ খায়?
ঘুমের ওষুধ আমরা নানান কারনে খেয়ে থাকি। কেউ মানসিক শান্তির জন্য, কেউ টেনশন দূর
করার জন্য, কেউ টেনশন কমানোর জন্য, কেউবা ঘুম ভালোভাবে পরিপূর্ণ না হলে। তবে
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ যে কারনে ঘুমের ওষুধ খায় সেগুলো হচ্ছে-
- দীর্ঘ ভ্রমণের (Journey) সময়
- দীর্ঘদিন রাতে ঘুমের সমস্যা বা ব্যঘাত ঘটলে
- রাতে বারবার ঘুম ভেঙে গেলে ইত্যাদি।
ঘুমের ওষুধ বেশি খেলে কি হয়?
ঘুমের ওষুধ বেশি খেলে কি হয়? এই প্রশ্নটির উত্তর বেশিরভাগ মানুষই জানতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলেন ঘুম ভালো হওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুমের ওষুধ নেয়া হলে এটি এক সময়
অভ্যাসে পরিনত হয়। আর এ অভ্যাস দীর্ঘকালীন প্রভাব পরে আমাদের শরীরের উপর।
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঘুমের ওষুধ খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগব্যাধি সৃষ্টি
হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এছাড়াও আমাদের মেজাজ সময় খিটখিটে থাকে, শরীরের মধ্যে অস্বস্তিকর বোধ হয় এবং
যেকোনো ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার সময় ক্লান্ত অনুভূত হয়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে
এলার্জির প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ সেবন করলে মানুষকে মৃত্যু
পর্যন্ত ঠেলে দিতে পারে।
কিছু কিছু ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন
কিডনি রোগ, নিম্ন রক্তচাপ, হার্টের ছন্দযুক্ত সমস্যাসহ খিচুনির মতো সমস্যা দেখা
দিতে পারে। অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ সেবনে হার্ট ও ব্রেনের রক্তনালীর রক্ত চলাচল
বন্ধ করে দেয়। এমতবস্থায় আমাদের স্বাস্থ্যের অবস্থাকে আরও গুরুতরভাবে খারাপ
করতে পারে।
আবার কিছু কিছু সময় অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করলে প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ারও
সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি কোমায় চলে যাওয়া এবং স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার
আশঙ্কা থাকে। আপনি যদি ঘুমের ওষুধ সেবন করেন তাহলে খেয়াল করবেন আপনার আচার-আচরণ
দিনের পর দিন পাল্টে যাচ্ছে।
কেননা আপনার শরীরের মধ্যে সমসময় ঘুমের চাহিদা থাকবে আর চোখে ঘুম থাকলে শরীর
ক্লান্ত অনুভূত হবে কোন কাজই করতে ভালো লাগবে না। তখন ভালো কথাগুলো আপনার
কাছে খারাপ মনে হবে। ঘুমের ওষুধ অনেকটা নেশার মতই কাজ করে। কারন ঘুমের
ঔষধের তালিকায় রয়েছে নেশা দ্রব্য যেগুলো আমাদের দেহের জন্য ঘুবই ক্ষতিকর।
ঘুমের ওষুধ বেশি সেবন করলে শরীরের সুবসময় ঘুমের প্রভাব ফেলবে। যার ফলে শরীর
থেকে বর্জ্য গুলো বের হতে বাধা গ্রস্থ হয়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও ঘুমের ঔষধ বেশি সেবন করলে তন্দ্রাচ্ছন্নতা ভাব দেখা
দিতে পারে। আপনি যখন ঘুমের ওষুধ সেবন করবেন তখন যদি আপনার ঘুম পরিমাণ মতো না হয়
তাহলে সেই ঘুমের প্রভাবটা পরের দিন পড়বে।
মনে রাখা জরুরি তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় কোন ধরনের যানবাহন চালানো সম্পূর্ণ
নিষিদ্ধ। তাই ঘুমের ওষুধ বেশি বা অতিমাত্রায় সেবন করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে
হবে। আপনি যদি ঘুমের সমস্যায় ভোগেন তাহলে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে
পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করুন। এটাই আপনার এবং আমাদের সকলের জন্য
মঙ্গলজনক হবে।
ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে
আমরা অনেকেই নিয়মিত বিভিন্ন কারণে ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ সেবন করে থাকি। তারা হয়তো
জানেই না যে তাদের শরীরকে ধীরে ধীরে কতটা ক্ষতিসাধন বা ক্ষতির সম্মুখীন
করছে। আসুন তাহলে ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে সেগুলো জেনে নেই।
- ডায়রিয়া
- বমি বমি ভাব
- অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে
- অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব
- স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া
- আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি
- অস্বাভাবিকভাবে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া
- চিন্তাভাবনার পরিবর্তন, যেমন হেলুসিনেশন
- প্রতিনিয়ত মাথাঘোরা বা মাথাব্যথা করা ইত্যাদি।
উপরের উল্লিখিত ক্ষতি ছাড়াও অনেকের নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘন ঘন
ঘুমের ওষুধ সেবনের আগে আমাদেরকে ক্ষতির দিকটা মাথায় রেখে একজন বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ সেবন করা উচিত।
দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ খেলে যে সমস্যা হতে পারে
ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে সেটি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন
দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ খেলে যে সমস্যা হতে পারে সেটাওজেনে নেই। দীর্ঘদিন
ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে মানুষ ওষুধের ওপরেই মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে
পড়ে এছাড়াও
- ওষুধে আসক্তি
- স্মৃতিশক্তি লোপ পায়
- অনেকের ঘুমের ওষুধ ছাড়া ঘুমই হয় না
- ওষুধের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীলতা
- দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ায় ওষুধ না খেলে নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে।
- আবার হঠাৎ করে ওষুধ সেবন করা বন্ধ কর দিলে জ্বর, কাশি, মানসিক অবসাদ, ম্যাজম্যাজ করা, ঠান্ডা, শরীর, পুরো শরীরে চুলকানিসহ আরও নানান সমস্যা দেখা দেয়।
ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়া যে ওষুধগুলো বিক্রি হয় না, তার মধ্যে ঘুমের
ওষুধ অন্যতম। কারণ ঘুমের ওষুধের ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি
হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত ঘুমের ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা খুবই
জরুরি।
কারা ঘুমের ওষুধ খেতে পারবেন না
আমরা মাথায় একটা বিষয় ঢুকে গেছে সেটা হচ্ছে, যে আমার নিয়মিত ঘুমের সমস্যা
হচ্ছে, আবার এতো নানান রকম টেনশন আর সইতে পারছি না, তাই এখন আমার ঘুমের ওষুধ
খাওয়া প্রয়োজন। এইটা ভেবে আমরা ওষুধ খেয়েও ফেলি। আমরা একটাবার চিন্তাও করি না
যে আমি এখন কোন পর্যায়ে আছি বা আমার এ সময় ঘুমের ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে
কিনা।
কিংবা ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত হবে
কিনা। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই এসব বিষয় আপনাকে আমাদেরকে সচেতন
থাকতে হবে। যারা ঘুমের ওষুধ খেতে পারবেন না বা যাদের ঘুমের ওষুধ সেবন করা উচিত
নয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো-
- অনেক বয়স্ক ব্যক্তি
- গর্ভাবস্থায়
- দুগ্ধ দানকারী মা
- এপিলেপসি বা খিঁচুনি রোগে ভুগছেন যাঁরা
- যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন
- যাঁরা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন
- যাঁরা লিভারজনিত জটিল রোগে ভুগছেন ইত্যাদি।
উপরের উল্লেখিত এসব সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ঘুমের ওষুধ খাওয়া যাবে
না। এ সময় ঘুমানোর ওষুধ খেলে আপনার শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আশা
করছি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এবার আসুন, ঘুমের ওষুধ ছাড়া যেভাবে সমস্যা
সমাধান করা যায় সেই বিষয়ে জেনে নেই।
ঘুমের ওষুধ ছাড়া যেভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা ঘুমের ওষুধ ছাড়াই সমস্যা সমাধান গুগলে খোজাখুজি
করেন। ঘুমের ওষুধ ছাড়া সমস্যা সমাধানের কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেগুলো আমাদের
সকলেরই জেনে নেওয়াটা জরুরি। ঘুমের ওষুধ ছাড়া সমস্যা সমাধানের ঘরোয়া উপায়গুলো
উল্লেখ করা হলো
আপনার শারীরিক বা মানসিক যে সমস্যার জন্য ঘুম হয় না, তা আগে খুঁজে বের করে
করতে হবে।
- প্রতি রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া।
- প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করা।
- দিনে ঘুম থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ঘুমাতে যাওয়ার আধা ঘন্টা আগে সব ধরনের ইলেকট্রিক যন্ত্র থেকে দূরে থাকতে হবে।
- চা, কফি বা যেকোনো ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যাবে না।
- ধূমপান বা নে*শাজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
আশা করছি, ঘুমের ওষুধ ছাড়া যেভাবে ঘরোয়া উপায়ে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব
সেগুলো জানতে পেরেছেন। এবার আমরা জেনে নিব ঘুমের ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সম্পর্কে।
ঘুমের ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ঘুমের ওষুধ সেবনের সঠিক নিয়ম হচ্ছে যারা বলেন যে ঘুমের বা দুশ্চিন্তা
মনোরোগের ওষুধ খেয়েও ঘুম আসে না। তাদের ক্ষেত্রে আপনাকে ঘুমাতে
যাওয়ার ঠিক এক থেকে দুই ঘন্টা আগে এসব ওষুধ সেবন করতে হবে। কারণ সর্বোচ্চ
ওষুধের কার্যক্রিয়া সাধারনত এক থেকে দুই ঘন্টা পরই শুরু হয়।
সিডিল (Sedil) খাওয়ার নিয়ম: সিডিল (Sedil) সাধারনত ঘুমের ঔষধ
হিসেবেই বাজারে বেশী বিক্রি হয়ে থাকে। এটি মূলত মাদক থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য
সুপারিশ করা হয়। যারা প্রাপ্ত বয়স্ক রয়েছেন তারা দিনে ১.৫ মিগ্রা থেকে ২
মিগ্রা এর বেশি সেবন করা যাবে না। খাবার খাওয়ার আগে এই ওষুধ টি সেবন
করা ভালো।
ডোরম্যাক্স (Dormax ) খাওয়ার নিয়ম: Dormax ট্যাবলেট বাজারজাত করে
থাকে অ্যারিস্টোফার্মা লিমিটেড কোম্পানি। আপনি আপনার নিকটস্থ যেকোন
ফার্মেসি থেকে এই মেডিসিন্ট পেয়ে যাবেন। প্রতিটি ঔষধের মূল্য ১০ টাকা করে
প্রতিটি ৩০ পিচে প্রতি বক্স থাকে। প্রতি বক্সের মূল্য হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।
প্রাপ্ত বয়স্করা দিনে ১.৫ মিগ্রা – ২ মিগ্রা এর অধিক সেবন করা যাবে না।
খাবার খাওয়ার আগে এই ওষুধ টি সেবন করা ভালো।
রিভোট্রিল ( Rivotril ) খাওয়ার নিয়ম: রিভোট্রিল ওষুধ প্রতিদিন তিন
ভাগে বিভক্ত করে দেয়া উচিত। যদি ওষুধ তিনটি সমান মাত্রায় বিভক্ত না হয়,
তাহলে বড় মাত্রাটি সর্বশেষে দেওয়া উচিত। প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে
প্রাথমিক মাত্রা হলো দৈনিক ১.৫ মি.গ্রা. এর উর্ধ্বে হওয়া যাবে না। খাবার
খাওয়ার আগে এই ওষুধ টি সেবন করা ভালো।
আশা করছি ঘুমের ওষুধগুলো খাওয়ার নিয়ম জানতে পেরেছেন। এবার আমরা খালি পেটে
ঘুমের ওষুধ খেলে কি হয় সেই বিষয়ে জেনে নিব।
খালি পেটে ঘুমের ওষুধ খেলে কি হয়?
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা না বুঝেই বা ভুলবশত ঘুমের ওষুধ খালি পেটে খেয়ে
ফেলি। অনেকেই হয়তো জানি না যে খালি পেটে কখনোই ঘুমের ওষুধ সেবন করা উচিত
নয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা খালি পেটে ঘুমের ওষুধ সেবন করতে বারবার বারণ
করেছেন। তবে কিছু কিছু ঘুমের ওষুধ খাবার খাওয়ার আগে সেবন করা যায়
যেমন ডোরম্যাক্স, সিডিল, রিভোট্রিল ইত্যাদি।
খালি পেটে শুধু ঘুমের ঔষধ না, গ্যাস্টিকের ঔষধ ব্যতিত কোন ঔষধই সেবন করা উচিত
নয়। খালি পেটে এসব ওষুধ সেবন করা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
তাই চেষ্টা করবেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ সকল ওষুধ ভরা পেটে সেবন
করা।
ঘুমের ঔষধ ব্যবহারের সতর্কতা
আপনি যদি নিয়ম মেনে ঘুমের ওষুধ সেবন না করেন সে ক্ষেত্রে এটি আপনার শরীরের
বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ
নিয়ে আপনার ঘুমের ওষুধ সেবন করা দরকার। কেননা অতিরিক্ত ওষুধের কারণে আপনার
মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘুমের ঔষধ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা উচিত নয়। গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী
মহিলাদের ঘুমের ঔষধ ব্যবহারের আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। যদি
আপনার অন্য কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে তবে ঘুমের ঔষধ ব্যবহারের আগে
ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
দীর্ঘদিন ওষুধ খেলে নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ার কারণে ওষুধ না খেলে নিদ্রাহীনতা
দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া—এসব
সমস্যাও হতে পারে। কিছু ওষুধ ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হয়। হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ
করার ফলে মানসিক অবসাদ, জ্বর, কাশি, ঠান্ডা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, সারা শরীরে
চুলকানিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।
লেখকের শেষ মন্তব্য
পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করব যে, ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ছাড়া যে
ওষুধগুলো বিক্রি হয় না, তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ অন্যতম। কারণ ঘুমের ওষুধের
ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডাক্তারের
পরামর্শ ব্যতিত ঘুমের ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা খুবই জরুরি। বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ সেবন করলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাওয়া
যাবে।
যেকোনো ঔষধ যেমন ভিটামিন, সাপ্লিমেন্ট, এমনকি হারবাল জাতীয় ওষুধ সেবন করলে
অবশ্যই বিষয়টি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে জানাতে হবে। আপনি যদি সম্পূর্ণ
আর্টিকেলে কোন বিষয়ে বুঝতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে
জানাবেন। তাহলে আমি যথাযথভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাকে সাহায্য করার
সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে এই বিষয় সম্পর্কিত আমাদের আজকের
পোষ্টটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও
প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট
নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url