পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাংলাদেশ
সম্মানিত পাঠক আজকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় টপিক পদ্মা
সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান নিয়ে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য আলোচনা করবো। যারা
বিভিন্ন চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা বিভিন্ন চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার
প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের জন্য আজকের পোষ্টটি অনেক উপকার হতে চলেছে।
কেননা বর্তমানে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় বা ইন্টারভিউতে পদ্মা সেতু
সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।
আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিন্তু পদ্মা
সেতুর সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান নেই। বিভিন্ন চাকরির প্রস্তুতি জন্য পদ্মা সেতু
সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান রাখাটা খুবই জরুরী। তাই আপনি যদি পদ্মা সেতু সম্পর্কে
জানতে চান তাহলে আমাদের সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। তাহলে
আপনি এই বিষয়ে অবগত হতে পারবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃউপস্থাপনা - পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
বর্তমান সময়ে পদ্মা সেতু হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম সেতু।
বাংলাদেশের জন্য এটি অবশ্যই গর্বের একটা ব্যাপার যে সম্প্রতি সময়ে এটি পৃথিবীর
বিভিন্ন রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছে। এর আগে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে
দীর্ঘতম সেতু ছিল।
কিন্তু এখন সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে জায়গা দখল করে নেয় পদ্মা সেতু। এটি শুধু
বাংলাদেশেই নয় বরং পদ্মা সেতু সারা বিশ্বের নানান রেকর্ড অর্জন করে মাথা উঁচু
করে দাঁড়িয়েছে। এই পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ার পরে বাংলাদেশের
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের জন্য মঙ্গলজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা পদ্মা সেতু
নির্মাণ হওয়ার আগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের লঞ্চে যাতায়াত করতে হতো।
যেই পথ ছিল অনেক বেশি সময় সাপেক্ষ একটা পথ। কিন্তু বর্তমানে পদ্মা সেতুর
নির্মাণের পরপরই সেই কষ্টের ৫-৬ ঘন্টার পথ এখন 5 থেকে 6 মিনিটে পাড়ি দেওয়া
সম্ভব। আজকে আর্টিকেলে আমরা পদ্মা সেতু সম্পর্কে সকল ধরনের সাধারণ জ্ঞান জেনে নিব
যেগুলো আমাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন পরীক্ষায় বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজে আসবে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে ইতিহাস
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বাংলাদেশ অন্য কোন দেশের কাছ থেকে ঋণ আদায় করেনি
বরং বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে না অর্থাৎ সম্পূর্ণ দেশের টাকায় পদ্মা সেতু
নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা-মাওয়া খুলনা মহাসড়কে ১৯৯৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মাসে
সেতু নির্মাণের জন্য প্রথম প্রস্তাব করা হয় । যেখানে ৩৬৪৩.৫০ কোটি টাকার
প্রস্তাব করা হয়।
এবং পরবর্তীতে ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের
পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর
নির্মাণ কাজ আরম্ভ করা হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও চায়না
মেজর ব্রিজ কোম্পানির মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করা হয়। এবং পদ্মা সেতুর
রক্ষণাবেক্ষণ ও চল আদায়ের জন্য করিয়া এক্সপ্রেস ওয়ে কর্পোরেশন ও চায়না মেজর
ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়।
এক্ষেত্রে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার সময় বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ে আমাদের
সারা দেশ জুড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় অপহরণকারীর ধারণা ও মানসিক
ভারসাম্যহীনদের মারধর ও গণ পিটুনির ঘটনাও ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে পদ্মা সেতু
নির্মাণ কর্তৃপক্ষ এগুলো তথ্য ভিত্তিহীন বলে ২০১৯ সালের জুলাই মাসের ১৯ তারিখে
এই বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে।
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত?
বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬.১৫ কিলোমিটার। তবে
রাস্তাসহ দৈর্ঘ্য যদি একত্রিত করা হয় তাহলে এর দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় প্রায় ৯ কি.মি।
মেঘনা নদী ও পদ্মা ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে মোট ৪১ টি
স্প্যান (খুটি) বসানো হয়েছে যাদের দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ মিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০
মিটার।
পদ্মা সেতু কোন জেলায় অবস্থিত
এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের ৩টি জেলাকে একসাথে সংযুক্ত করেছে। দেশের মুন্সীগঞ্জের
লৌহজং এর সাথে মাদারীপুর এবং শরীয়তপুর জেলা যুক্ত হয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিম
অংশে সাথে উত্তর ও পূর্ব অংশের সুগম যাতায়াত ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতুর উপরের
অংশে রয়েছে মূল সেতু ও নিচের অংশে রেলপথ।
পদ্মা সেতু বিশ্বের কততম সেতু
সারা বিশ্বের নানান ধরণের সেতুর মধ্যে আমাদের বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর অবস্থান
হচ্ছে ১২২ তম। পৃথিবীর দ্বিতীয় খরস্রোতা নদীর উপর দিয়ে এটি নির্মিত হয়েছে।
পদ্মা সেতুর খরচ কত
বাংলাদেশের অন্যতম যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে পদ্মা সেতুর
মাধ্যমে। যা তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এই টাকা
সরকারের বরাদ্দ ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ঋণের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়েছে যে আগামী ৩৫ বছরে সুদ
সহ মোট ৩৬ হাজার কোটি টাকা প্রদান করতে হবে।
পদ্মা সেতুর নকশা ও কর্মপরিকল্পনা
পদ্মা সেতুর পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, পদ্মা সেতু একক ভাবে না
বরং যৌথভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। যেখানে তাদের বহু কনসালটেন্ট ছিলেন।
নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান এইসিওএম প্রতিষ্ঠানকে পদ্মা সেতুর
নকশাল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যারা ১৯৯০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম
শুরু করেছেন।
মূলত ১৯০৯ সালে হংকংয়ের একটি কোম্পানির নেতৃত্বের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর নকশা
প্রণয়নের কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়। এছাড়াও এই কোম্পানির সাথে আরো
বিভিন্ন কোম্পানি সংযুক্ত ছিল যেমন: কানাডার নদ ওয়েস্ট হাইড্রোলিক
কনসালটেন্ট, অস্ট্রেলিয়ার এসমেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানি এছাড়াও
বাংলাদেশের এসিই লিমিটেড কোম্পানি।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম কি
উত্তর: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি হয় কখন
উত্তর: ২০১৪ সালের ১৭ই জুন বাংলাদেশ সরকার এবং চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির
সাথে চুক্তি হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ধরন কি বা কেমন
উত্তর: পদ্মা সেতুর ধরন মূলত স্টিল দিয়ে নির্মিত এবং দ্বিতল বিশিষ্ট
কংক্রিট সেতু।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু বিশ্বের কততম সেতু
উত্তর: পদ্মা সেতু সারা বিশ্বে ১২২তম সেতু।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত
উত্তর: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কত সালে উদ্বোধন হয়
উত্তর: পদ্মা সেতু ২০২২ সালে উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কত তারিখে উদ্বোধন হয়
উত্তর: পদ্মা সেতু জুন মাসের ২৫ তারিখে উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু নির্মাণের মোট কত টাকা খরচ হয়
উত্তর: প্রত্যাশিত নির্মাণে সর্বমোট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা খরচ
হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা কয়টি
উত্তর: পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ট।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত ও প্রস্থ কত
উত্তর: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ কিলোমিটার
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের কোন জেলায় অবস্থিত
উত্তর: পদ্মা সেতু মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কোন দুটি জেলা নিয়ে অবস্থিত
উত্তর: শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পাইলিং এর গভীরতা কত
উত্তর: পদ্মা সেতুর পাইলিং এর গভীরতা ১২৮ মিটার বা ৪২০ ফুট।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়ন করেছে কোন কোম্পানি
উত্তর: আমেরিকার মাল্টিন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর মোট উচ্চতা কত ফুট
উত্তর: পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা হচ্ছে ৬০ ফুট।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা কয়টি
উত্তর: পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা ৪১টি।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কত মাত্রা ভূমিকম্প সহনীয় করতে পারে
উত্তর: ভূমিকম্পন সহনশীল হচ্ছে ৯ মাত্রা।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর কাজ কখন শুরু হয়
উত্তর: পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৬ শে নভেম্বর।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ কবে শেষ হয়
উত্তর: পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ২৩শে জুন শেষ হয়
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু মোট কয়টি জেলাকে সংযুক্ত করেছে
উত্তর: ২১টি জেলাকে সংযুক্ত করেছে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়ার কততম সেতু
উত্তর: পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ট তম সেতু।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর যেদিন ১ম স্প্যান বসানোর পর সেতু দৃশ্যমান হয় কোন
তারিখে
উত্তর: ২০১৭ সালের ৩০শে সেপ্টম্বর।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে রেল লাইনের সংস্থান কোন ধরনের
উত্তর: ডুয়েল গেজ লাইন।
প্রশ্ন: ঢাকার সাথে পদ্মা সেতু কতটি জেলাকে সংযুক্ত করবে
উত্তর: ঢাকার সাথে পদ্মা সেতু ১৯টি জেলাকে সংযুক্ত করবে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল মোট কত বছর
উত্তর: পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল ১০০ বছর।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের কোন বিভাগে অবস্থিত
উত্তর: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগে অবস্থিত।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কাজ করা বাঙালী মহিলা প্রকৌশলীর নাম কি
উত্তর: ইশরাত জাহান ইশি
২৭টি
সকল পরীক্ষার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে মোট কয়টি পাইলিং রয়েছে
উত্তর: পদ্মা সেতুতে মোট ২৬৪ টি পাইলিং রয়েছে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর প্রকল্পের জনবল কত
উত্তর: প্রায় ৪ হাজার।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার সংখ্যা কয়টি
উত্তর: পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার সংখ্যা ৮১টি।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পাইলিং কত ফুট গভীরতা
উত্তর: পদ্মা সেতুর পাইলিং ৩৮৩ ফুট গভীরতা।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর রাস্তা কয় লেন বিশিষ্ট
উত্তর: পদ্মা সেতুর রাস্তা ৪ লেন বিশিষ্ট।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কোথায় রেললাইন স্থাপন করা হয়
উত্তর: দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতুর নিচ তলায় রেললাইন স্থাপন করা হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু মূলত কি দিয়ে নির্মিত হয়েছে
উত্তর: পদ্মা সেতু হচ্ছে দ্বিতলবিশিষ্ট যা কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে
নির্মিত হয়েছে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর বিশেষ নকশা কোন দেশে করা হয়
উত্তর: পদ্মা সেতুর বিশেষ নকশা হংকংয়ে করা হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন কত সদস্যের করা
হয়
উত্তর: ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পের কে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি ছিলেন
উত্তর: প্যানেলের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু মোট কতটি দেশের শ্রম ও মেধা দিয়ে নির্মিত
হয়েছে
উত্তর: মোট ২০ টি দেশের শ্রম ও মেধা দিয়ে নির্মিত হয়েছে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কত টাকা টোল দিয়েছিল
উত্তর: ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন। গাড়িবহরে মোট ১৮টি গাড়ি ছিল।
৩৮
প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু
উদ্ভোধন করেন
উত্তর: ২০২২ সালের জুন মাসের ২৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ
হাতে টোল প্রদান করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু উদ্ভোধন করেছিলেন।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কাদের অর্থায়নে তৈরি হয়
উত্তর: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হয়।
প্রশ্ন: টোল আদায়ের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর খরচ কত বছরে উঠতে পারে
উত্তর: প্রায় ৯ বছরে পদ্মা সেতুর খরচ কত বছরে উঠতে পারে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর অফিসিয়াল নাম কি
উত্তর: পদ্মা বহুমুখী সেতু
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় কত তারিখে
উত্তর: ৭ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর মোট অনুমোদিত খরচ কত টাকা
উত্তর: ২৭,৭৩,২০৮ কোটি টাকা
প্রশ্ন: পদ্মা মূল সেতু নির্মাণ খরচ কত টাকা
উত্তর: ১২,১৩,৩৩৯ কোটি টাকা
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট জনবল কত জন
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট জনবল প্রায় ৪ হাজার জন
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে মোট কয়টি ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে
উত্তর: ৪১৫ টি
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর সাথে জড়িত সংস্থাগুলোর নাম কি কি
উত্তর: বিশ্ব ব্যাংক, আইডিবি, জাইকা, এডিবি
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর সর্বশেষ ৪১ তম স্প্যাম কত তারিখে বসানো হয়
উত্তর: ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে নদী শাসনের জন্য চীনের ঠিকাদার কোম্পানির নাম কি
উত্তর: পদ্মা সেতুতে নদী শাসনের জন্য চীনের ঠিকাদার কোম্পানির নাম
সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে ভূমিকম্প প্রতিরোধে পদ্মা সেতুতে বসানো বিয়ারিং এর নাম
কি
উত্তর: ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং এর সক্ষমতা কত টন
উত্তর: পদ্মা সেতুতে ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং এর সক্ষমতা ১০ হাজার টন
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস ৩ মিটার
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর যানবাহন সক্ষমতা কত?
উত্তর: প্রায় ৭৫ হাজার যানবাহন
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ১ম স্প্যান বসানো হয় কয় তারিখে?
উত্তর: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে ১০টি বাক্য
- বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহৎ সেতুর নাম হল পদ্মা বহুমুখী সেতু।
- বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ এবং বিশ্বের ১২২ তম দীর্ঘ সেতু হচ্ছে পদ্মা সেতু ।
- পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে স্বপ্নের এবং ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতু ২৫ জুন ২০২২ খ্রিস্টাব্দে উদ্বোধন করেন।
- পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ প্রায় ১৮.১০ মিটার।
- স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে মোট ৪২ টি পিলার ও প্রায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১ টি স্প্যান বসানো হয়।
- পদ্মা সেতু মুন্সিগঞ্জ এর মাওয়া এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরা কে পরস্পর সংযুক্ত করা হয়েছে।
- পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
- পদ্মা সেতুর ২ টি স্তরের মধ্যে উপরের স্তরে রয়েছে ৪ লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে রেলপথ।
- পদ্মা সেতু বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেইসাথে অর্থনৈতিকভাবেও।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে অনুচ্ছেদ
পদ্মা সেতু হল বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম বহুমুখী সেতু। কোনো প্রকার বৈদেশিক
সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের বাস্তবায়িত সবচেয়ে বড় সেতু ও
বৃহৎ প্রকল্প। এটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প এবং নির্মাণের পর এটিই হবে দেশের
দীর্ঘতম সেতু। সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।
মূল সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি এবং প্রস্থ ১৬.১০ মিটার। মুন্সীগঞ্জ জেলার
মাওয়া থেকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা সংযোগকারী সেতুটির দুটি স্তর রয়েছে। উপরে
একটি চার লেনের রাস্তা আছে এবং নীচে একটি রেলপথ রয়েছে। পদ্মা সেতু ভবিষ্যতে
গ্যাস, রেল, পাওয়ার লাইন এবং ফাইবার অপটিক ক্যাবল সম্প্রসারণে ব্যবহার করা
হবে।
৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বাজেটের এই সেতুটি আমাদের সমাজ, বাংলাদেশের
দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে। সেতুটি
এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন স্থানকে সংযুক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ
অংশ হবে পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের মানুষ আজ তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাছাকাছি
চলে এসেছে।
যদিও বিশ্বব্যাংক ও দাতারা অন্যায়ের দাবী নিয়ে চলে গেলেও বাংলাদেশ সরকার হাল
ছাড়েনি। সেতুটি নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং নির্মাণ পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদার চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির
মতে, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়ে
যাবে এবং বর্তমানে এটি চালু হয়ে গেছে। প্রকল্পটি ৩ কোটিরও বেশি মানুষকে
সাহায্য করছে,যা বাংলাদেশের সমস্ত জমির প্রায় ২৯%। পদ্মা সেতু বর্তমানে
বাংলাদেশের অনেক বড় একটি অর্জন এবং গৌরবের বিষয়।
লেখকের শেষকথাঃ পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
পরিশেষে আমরা বলতে পারি, আমাদের এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের জনগনের জন্য পদ্মা
সেতু যাতায়াত ব্যবস্থায় ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এই সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বহু মানুষের কর্মসংস্থান
সৃষ্টি সহ বিভিন্ন শিল্প ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বেকারত্ব দূর করতে
সহায়তা হবে। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রিয় পাঠক, আমরা ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত বিভিন্ন
তথ্য বিস্তারিতভাবে উপরে আলোচনা করেছি। আশা করছি, আপনারা এতক্ষণে পদ্মা সেতু
সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি এই পোষ্টের
কোন অংশ বুঝে না থাকেন, তাহলে এই পোষ্টের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। তাহলে,
আমরা সেই অংশটুকু ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আমাদের এই পোষ্টটি আপনার যদি পছন্দ হয়ে থাকলে অবশ্যই
শেয়ার করে দিবেন। এতে অন্যরাও উল্লিখিত বিষয়গুলো জানতে পারবেন। এতে তারাও উপকৃত
হতে পারবেন। এ ধরণের বিভিন্ন তথ্য পেতে এবং আরও
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকার অনুরোধ
রইলো। ধন্যবাদ।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url